Saturday, May 28, 2016

Quick Sand বা চোরাবালি , সাগরের আরেক মৃত্যুফাঁদ, জনসচেতনতায় Tourist Police Bangladesh

Quick Sand বা চোরাবালি , সাগরের আরেক মৃত্যুফাঁদ, জনসচেতনতায় Tourist Police Bangladesh

মৃত্যু ডেকে নেয় বারবার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের উত্তর দিকে মহেশখালী চ্যানেলসংলগ্ন নাজিরারটেক থেকে কলাতলী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সৈকত এলাকা এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ এলাকার সৈকতে অজস্র চোরাবালি (বালির গর্ত) এবং চোরাগুপ্তা খাল থাকার তথ্য জানা গেছে। সাধারণত সাগরের পানি নেমে গেলে শুকনা অবস্থায় এসবের দেখা মেলে না। এ কারণে সৈকতের এই 'নীরব ঘাতক' নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই কারো। অথচ পর্যটকদের এসব বিপজ্জনক স্থান সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা নেওয়া উচিত

ইয়াছির লাইফ গার্ডের মোস্তফা কামাল  বলেন, 'বিপজ্জনক সময়ে সাগরে নামতে নিষেধ করলে উল্টো অনেকেই আমাদের ওপর খেপে যান। অনেক সময় পর্যটকরা বলেন, নিজের টাকা খরচ করে বেড়াতে এসেছি সাগরে গোসল করব বলে। বাধা দেওয়ার তোমরা কে

সাধারণভাবে আমরা চোরাবালি বলতে বুঝি- যখন বালি, কাদা বা নুড়ি গর্ভস্থ পানির প্রবাহের সান্নিধ্যে আসে, সেই বালি বা নুড়ির দানাগুলোর মধ্যে যে ঘর্ষণ শক্তি থাকে তা কম হয়ে যায়, আর সেই বালি বা মাটি ভার সহ্য করতে পারে না- একেই চোরাবালি বলে।

পানি শুধু মাটির উপরেই না মাটিন নিচেও থাকে। প্রাকৃতিকভাবে ভূগর্ভে পানি থাকার এই ঘটনা ঘটে দুই ভাবে। ১- Flowing underground water/spring ২- Earthquake। এই আটকে পরা পানি তার চারপাশের soil কে সিক্ত করে। এভাবে liquefied হতে হতে এক পর্যায়ে বালির অণুগুলোর মধ্যে যে friction থাকে তা কমে যায় এবং বালি পানির অণুর মত আচরণ করে। ভেজা এই বালি এক পর্যায় এমন অবস্থায় যায় যে সে কোন ভারি বস্তুর চাপ নিতে পারে না। solid water এ কিছু পরলে সাথে সাথে ডুবে যায় আর চোরাবালি তে কিছু পরলে তা ধীরে ধীরে ডুবে। মূলত এটাই বৈজ্ঞানিক ব্যাখা।

এ ধরনের ব্যাপার আমরা সমুদ্র সৈকতে দেখতে পাই। সমুদ্রধারের বালিতে যদি কেও দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে খানিকক্ষণ পর দেখা যাবে যে ধীরে ধীরে তার পা বালির ভেতর বসে যাচ্ছে। এটাও এক ধরনের ছোটখাটো চোরাবালি। তবে এ ধরনের চোরাবালির গভীরতা মাত্র কয়েক ইঞ্চি হয়। তাই সেসব স্থানে শুধু আমাদের পায়ের পাতা ডোবে। তবে যে সব স্থানে এর গভীরতা বেশি সেসব স্থান খুবই ভয়ংকর।

চোরাবালি পানি ও তরল কাদা মিশ্রিত এমনই একটি গর্ত, এর ফাঁদে একবার পা দিলে আর নিস্তার নেই। আস্তে আস্তে ডুবে যেতে হয় বালির ভেতর। যত নড়া যায় ততই ডুবে যেতে থাকে শরীর। সাধারণত নদী বা সমুদ্রতীরে কাদা মিশ্রিত বালির ভেতরে লুকানো অবস্থায় থাকে চোরাবালি। কোনও মানুষ যদি সেই গর্তের ধারে-কাছে যায়, তাহলে শরীরের চাপে ওই বালি ক্রমে সরে যেতে থাকে। ফলে মানুষ শত চেষ্টা করেও আর ওপরে উঠে আসতে পারে না। চোরাবালিতে পড়ার পর সেখান থেকে উঠে আসার জন্য চেষ্টা করলে শরীরের চাপে আরও দ্রুত ডুবে যেতে হয়। সময়মতো কেও এগিয়ে না এলে ওই মানুষ নিশ্চিত মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ে। তবে অধিকাংশ চোরাবালি সাধারণত মারাত্মক নয়। তবে এটি প্রকৃতির একটি অদ্ভুত বিস্ময়।

যেসব জায়গায় পানি বেশি, সেসব জায়গায় চোরাবালি থাকার সম্ভাবনাও বেশি। যেমন জলা, নদী, খাল, সমুদ্রতীর এবং জলাভূমি। যেসব জায়গায় ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ থাকে সেখানে চোরাবালি থাকতে পারে বা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

চোরাবালিতে আটকে গেলে একদমই অধৈর্য হওয়া যাবে না। অধৈর্য হয়ে হাত-পা ছোড়াছুড়ি করলে আরও বেশি আটকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সবার মনে রাখা উচিত, চোরাবালি কিন্তু পানির চেয়ে অনেক বেশি ঘন। তাই চোরাবালিতে ভেসে থাকা পানির চেয়ে অনেক বেশি সহজ। যদি সঙ্গে কোনও ভারি বস্তু থাকে তাহলে তা ছেড়ে ফেলতে হবে। কারণ ভারি বস্তু আরও বেশি দ্রুত নিচে টেনে নিতে পারে।নিচে একটি ভিদিও লিঙ্ক দেওয়া আছে দেখুন।

মানুষের শরীরের ঘনত্ব 62.4 pounds প্রতি কিউবিক ফুটে। চোরাবালির ঘনত্ব পানির থেকে বেশি। অর্থাৎ মানুষ যদি পানিতে ভেসে থাকতে পারে , তাহলে চোরাবালিতেও অনায়াসে পারবে, যেহেতু চোরাবালির ঘনত্ব পানির থেকে বেশি। তাই চোরাবালিতে পড়ে গেলে একদম নড়াচড়া করা যাবে না। যত মুভমেন্ট হবে তত ডুবে যাবার আশংকা বাড়বে। চোরাবালি শুধু সমুদ্র সৈকতেই থাকে না। নদীর পাড়ে, হাওর এর আশে পাশেও থাকতে পারে।

বেশিরভাগ চোরাবালির গভীরতা কম হয়। খানিকটা ডোবার পর হয়তো পা তলায় আটকে যেতে পারে। যদি তা না হয়, মানে যদি চোরাবালি খুব গভীর হয় তাহলে পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে যেমন পানিতে আমরা যেভাবে সাঁতার কাটি, ঠিক সেভাবে নিজের শরীরকে যতটা সম্ভব অনুভূমিক করে ফেলতে হবে। তারপর খুব ধীরে ধীরে সাঁতরে চোরাবালির বাইরে আসার চেষ্টা করতে হবে। সাথে যদি অন্য কোনও ব্যক্তি থাকে তাহলে তাকে বলতে হবে নিরাপদ দূরত্ব থেকে রশি ফেলতে এবং এই রশি ধরে ধীরে ধীরে চোরাবালি থেকে উঠে আসা যাবে।

https://www.youtube.com/watch?v=a2VJqud3Ls8

collected from Internet

No comments:

Post a Comment